
শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রসবকালীন ফিস্টুলা নির্মূল দিবস পালিত হয়েছে। ২০ মে মঙ্গলবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন সিআইপিআরবি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনএফপিএ এই আয়োজনে সহযোগিতা প্রদান করে।
‘ফিস্টুলায় আক্রান্ত নারীর স্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিত করি, প্রসবজনিত ফিস্টুলা মুক্ত দেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মঙ্গলবার সকালে সিভিল সার্জনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক নিরঞ্জন বন্ধু দাম, জেলা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস সাথী, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মোবারক হোসেন, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. আহসান উল হাবিব, ইউএনএফপিএ’র কো-অর্ডিনেটর ডা. সপ্তর্ষি সাহা শামা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিআইপিআরবি’র জেলা কো-অর্ডিনেটর শারমিনা পারভীন ও সুমন দাস।
সভায় প্রধান অতিথি সিভিল সার্জন মুহাম্মদ শাহীন বলেন, প্রসবজনিত ফিস্টুলা নারীর জন্য একটি স্পর্শকাতর স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ফিস্টুলামুক্ত করার অঙ্গীকার করেছে। এ লক্ষ্যে সরকার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘ফিস্টুলা নির্মূল কার্যক্রম ২০৩০’ বাস্তবায়ন করছে। এতে সহায়তা করছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) ও সিআইপিআরবি।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, ২০০৩ সালে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ নারী ফিস্টুলা রোগে ভুগছেন। বাংলাদেশে এই সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার এবং প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার নতুন রোগী যুক্ত হন। ফিস্টুলা রোগ প্রতিরোধে সামাজিক সচেনতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধ ও কমবয়সে গর্ভধারণে নিরুৎসাহিত করা এবং নিরাপদ প্রসবের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
সভায় সিআইপিআরবি’র জেলা কো-অর্ডিনেটর শারমিনা পারভীন জানান, শেরপুর জেলায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৮ জন ফিস্টুলা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনকে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা এবং ২ জনকে জাতীয় ফিস্টুলা সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসাশেষে ৫ জন মাকে পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলাকে ফিস্টুলামুক্ত ঘোষণা দেওয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা একযোগে কাজ করছেন।
কর্মসূচিতে জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা এবং শেরপুর নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।